admin
- ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ / ১৩০ Time View
১৯ বছরের চোখের জলে মেয়েকে খুঁজে পেলেন মা
আট বছর বয়সে খালার সঙ্গে ঢাকায় বেড়াতে এসে হারিয়ে যায় কিশোরগঞ্জের লাকী আক্তার।
এখন তার বয়স ২৭। এ দীর্ঘ ১৯ বছর কেবলই অপেক্ষার। কখনও গৃহকর্মী হিসেবে, কখনও সেফ কাস্টোডিতে কাটে লাকীর জীবন। হারানো সন্তানকে ফিরে পেতে মা-বাবা ঘুরেছেন দ্বারে দ্বারে। অবশেষে অপেক্ষার অবসান হলো। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতায় হারানো লাকী ফিরে এসেছে মায়ের বুকে
মেয়েকে আবারও ফিরে পাবেন- এমন আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন মা। কারণ এরইমধ্যে যে কেটে গেছে ১৯ বছর। আট বছর বয়সে খালার সঙ্গে ঢাকায় বেড়াতে এসে হারিয়ে যায় কিশোরগঞ্জের লাকী। ভুল করে সদরঘাট থেকে খুলনাগামী একটি লঞ্চে উঠে গিয়েছিল। লঞ্চ চলে যায় খুলনার বড় বাজার ঘাটে। এক নিরাপত্তারক্ষী লাকীকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। ভর্তি করিয়ে দেন ইউনিসেফের স্কুলে।
এখন লাকীর বয়স ২৭। জীবনের ১৯টি বছরের বেশিরভাগ সময়ই তিনি কাজ করেছেন গৃহকর্মী হিসেবে। এ সময়ের মধ্যে লাকী তার মা-বাবার কাছে ফিরে যেতে চাইলেও সম্ভব হয়নি ঠিকানা না জানার কারণে। ছিলেন একজনের সেইফ কাস্টোডিতেও।
লাকী জানান, এখন অনেক খুশি। বাবা-মাকে খুঁজে পেয়েছি। এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
লাকী ছোট ভাই মনিরুল ইসলাম বলেন, বোন আমার বড় ছিল। তাকে পাওয়ার জন্য যে যেখানে বলেছেন, বাবা-মা সেখানে ছুটে গিয়েছেন। কোনো সময়ে টাকা ছিল না এমন সময়ে ঋণ করেও বড় বোনকে খুঁজতে চলে যান। এভাবে আমার দাদার ভিটেমাটিও বিক্রি করে দেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, এক বছর আগে আমরা একটা অভিযোগ পাই। ১৯ বছর ধরে মা তার মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছেন না- এমন তথ্য আমাদের কাছে ছিল। অভিযোগে দেখেছি বাঙ্গালপাড়া, কিশোরগঞ্জের একটি গ্রামে নাম আছে বাঙ্গালপাড়া। সে তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের সাইবার পুলিশ ডিআইজি চট্টগ্রামের সহায়তা উদ্ধার করি।
তিনি আরও বলেন, মায়ের সঙ্গে মেয়ের ১৯ বছরের পর দেখা হয়েছে। তারা ১৯ বছর ধরে চোখের পানি পেলেছেন। রাস্তায় মেয়েকে খুঁজেছে। অবশেষে মা-মেয়ের মিলন হয়েছে।
প্রয়োজনে লাকীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দেয়া হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে।